প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও এখন থেকে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন অনলাইন বাজারে। এমনকি ক্রেতার সঙ্গে সরাসরি দর–কষাকষিও করতে পারবেন।
উৎপাদনকারী নির্দিষ্ট এলাকা নয়, বরং সারা দেশের ক্রেতাদের কাছে তা পৌঁছাতে পারবেন বিনা খরচে। করোনাকালে কুটির, ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পসহ (সিএমএসএমই) যেসব উদ্যোক্তা পণ্য বিক্রি করতে পারছিলেন না, তাঁদের বিক্রির আওতা বাড়াতেই এ উদ্যোগ। উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য অনলাইন বাজার www.bscic-emarket.gov.bd চালু করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক)। এ জন্য ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা–২০২১ অনুসারে উদ্যোক্তা-ক্রেতাদের জন্য বাংলায় লেখা একটি ‘শর্তাবলিও’ তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞাপন
এ অনলাইন বাজারের মাধ্যমে শুধু দেশের ভেতরেই নয়, বিদেশে বসেও যে কেউ ক্রয় করতে পারবেন ৩৬১ ধরনের পণ্য। সে ক্ষেত্রে ইউএস ডলার, রাশিয়ান রুবল, সিঙ্গাপুরি ডলার, সুইডিশ ক্রোনা ও বাংলাদেশি টাকায় মূল্য পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৫ জন উদ্যোক্তাকে নিয়ে চালু হয় অনলাইন মার্কেটটি। নিবন্ধিত উদ্যোক্তার সংখ্যা এখন ৩০০-এর বেশি। পণ্য ক্রয়ের অর্ডার আসাও শুরু হয়েছে, যার বড় অংশ ঢাকার ক্রেতা। মূলত হাতে তৈরি পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানায় বিসিক।
করোনার প্রকোপ যখন বেশি ছিল তখন বিসিকের ৬৪টি জেলাভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপগুলোতে প্রায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা পণ্য বিক্রি করেছেন, দাবি বিসিকের। সেসব গ্রুপ থেকে সাড়া পেয়েই সব উদ্যোক্তাকে এক মাধ্যমে আনতে চালু হয়েছে এ অনলাইন বাজার। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি এখানে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে বিদেশিদেরও। তবে বিক্রির সুযোগ পাবেন শুধু দেশি উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া শুধু দেশি পণ্যই বিক্রি হবে এখানে।
বিসিকের বিপণন বিভাগের উপব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির প্রথম আলোকে জানান, ছোট উদ্যোক্তাদের মার্কেট চ্যানেল নেই। যেমন কেউ উৎপাদন করেন সিলেটে কিন্তু তাঁর পণ্য ঢাকায় সরাসরি বিক্রির সুযোগ নেই। তাঁরা শহরে পণ্য পৌঁছাতে পারেন না অর্থনৈতিক, কারিগরি, স্বল্প পড়াশোনাসহ নানা কারণে। মূলত ক্রেতার সঙ্গে তাঁদের সংযোগ তৈরি করতেই এ উদ্যোগ। কিন্তু অনলাইন মার্কেটের প্রতি যে নেতিবাচক ধারণা জন্মেছে, সেখানে আরেকটি প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানো কতটা যৌক্তিক—এর জবাবে আলী আজগর নাসির জানান, অনলাইন মার্কেটের নামের সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিসিকের সংশ্লিষ্টতা জনগণের বিশ্বাস বাড়াবে।