বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা যশোরের ঝিকরগাছায় থাকেন শাহনাজ হক।
গৃহিনী মিসেস হক ২০০৭ সালে নিজের নামে একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন। চৌদ্দ বছর আগে তিনি ইসলামি ব্যাংকে অ্যাকাউন্টটি খোলেন দুটি কারণে। শাহনাজ হকের স্বামী মধ্যপ্রাচ্যের একটা দেশে থাকেন। এই ব্যাংকে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠাতে সুবিধা। আরেকটি কারণ: ইসলামী চিন্তাধারায় বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ইসলামি ব্যাংকে লেনদেন করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা তো সারা জীবন বেঁচে থাকবো না। তাই ইসলামের পথেই চলতে চাই। এখানকার সুযোগ-সুবিধা ভালো। অন্য ব্যাংকের মত সুদ নেই। এখানে টাকা খাটালে তারা কিছুটা লাভ দেয় তারপর বলে যে পরে আবার লাভ হলে আবার দেবে। আমি সেটাই মেনে নেই। কারণ ইসলামে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই চলতে চাই, শুধু আমি না, আমার পরিবারের সবাই ইসলামি ব্যাংকে লেনদেন করি।”
বাংলাদেশে এখন ১০টা ইসলামি ধারার ব্যাংক রয়েছে। প্রচলিত ধারা এবং ইসলামি ধারার ব্যাংক ব্যবস্থার মূল পার্থক্য সুদ এবং মুনাফার ক্ষেত্রে। ইসলামি ধারার ব্যাংকিং এ বলা হয় ‘প্রফিট- লস-শেয়ারিং’ অর্থাৎ ব্যাংক যেহেতু গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত রাখছে, ব্যাংকের যদি লাভ হয় তাহলে আমানতের উপর গ্রাহক লভ্যাংশ পেতে পারে। কিন্তু ব্যাংকের যদি ক্ষতি হয় তাহলে গ্রাহক লভ্যাংশ পাওয়ার জন্য যোগ্য হবে না। এটাই প্রচলিত এবং ইসলামি ব্যাংকের মধ্যে মূল পার্থক্য। এক্ষেত্রে আগে থেকেই গ্রাহককে প্রচলিত ব্যাংকের মত লিখিত কোন কাগজে লিখে দেবে না যে কত শতাংশ মুনাফা সে পাবে। কিন্তু ইসলামি ব্যাংকের ক্ষেত্রে মৌখিকভাবে মুনাফার একটা শতাংশের কথা জানিয়ে দেয়া হয়। ইসলামি ধারার ব্যাংকিংএ কয়েকটি দিক রয়েছে। যেমন: মুদারাবা কনসেপ্ট- মুনাফার অংশীদারিত্ব, মুরাবাহা- লাভে বিক্রি (লোনের ক্ষেত্রে), এবং মুসারাকা- লাভ । বাংলাদেশে যে ১০টা ইসলামি ব্যাংক রয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলো পরিচালিত হচ্ছে শরিয়া অনুযায়ী এবং তাদের কার্যক্রম জনকল্যাণমুখী।